বাড়িতে ছোট বাচ্চা রয়েছে? সরিয়ে রাখতে হবে এই জিনিসগুলি

Parenting Tips।বাড়িতে ছোট বাচ্চা রয়েছে? সরিয়ে রাখতে হবে এই জিনিসগুলি

বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে কিছু কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা একজন অভিভাবক হিসাবে খুবই জরুরি । বাচ্চার হাতের কাছে এমন কোন ছোট জিনিস রাখবেন না যা শিশু খুব সহজেই মুখে দিয়ে দেয় । আপনাকে কোন কোন জিনিসগুলি বাচ্চার থেকে সরিয়ে রাখা প্রয়োজন তা জানতে আজকের অ্যাটিক্যালটি অবশ্যই পড়ুন ।  

বাড়িতে ছোট বাচ্চা রয়েছে? সরিয়ে রাখতে হবে এই জিনিসগুলি

সদ্যোজাত শিশু আসার আগে পর্যন্ত আপনি শখের অনেক জিনিস দিয়েই হয়তো লিভিং রুম সাজিয়েছেন, যেখানেই বেড়াতে গেছেন না কেন কোন না কোন মূল্যবান জিনিস কিনেছেন শুধুমাত্র লিভিং রুমের শোভা বাড়িয়ে তোলার জন্য। এমন কোন কর্নার তৈরি করেছেন যা কিনা যে কোন অতিথি ঢোকা মাত্র তাদের মন কেড়ে নিয়েছে। আপনার শো পিসের কালেকশন হয়তো দেখার মত।

কিন্তু সন্তান লাভের পর এর অনেক কিছুরই পরিবর্তন করতে হয়। টেবিলের উপর শো পিস বা ম্যাগাজিন সাজিয়ে রাখার মত ব্যাপারগুলি এসময় একটু পাল্টে ফেলার দরকার আছে। মূলত পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চা রয়েছে এমন বাবা মায়েদের সব সময়েই সচেতন থাকতে হয় বাচ্চার জন্যও। বাড়িতে এমন অনেক জিনিস থাকে যা বাচ্চার থেকে দূরে সরিয়ে রাখা দরকার। তার কারণ প্রথমত তা বাচ্চার জন্যও ক্ষতিকারক হতে পারে, আর দ্বিতীয়ত অত্যাধিক  প্রয়োজনীয় কোন জিনিস নষ্ট করে ফেললে তার জন্য সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

 

  • কয়েন সরিয়ে রাখুন

আপনার বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে প্রথমেই যেটি আপনাকে সরাতে হবে তা হল কয়েন। যে কোন কিছু দেখলেই তা হাতে নেওয়া এবং মুখে পুরে দেওয়া ছোট বাচ্চাদের মধ্যে একটি খুব সাধারণ প্রবৃত্তি। এক্ষেত্রে শিশুর হাতে কয়েন পড়লে তা খুবই বিপজ্জনক কোন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। ফলে বাচ্চার সুরক্ষার কথা চিন্তা করে কয়েন বা এই জাতীয় জিনিস সরিয়ে রাখুন অথবা তা সম্ভব না হলে অন্তত বাচ্চার হাতে পৌঁছয় না এমন কোন নিরাপদ জায়গায় রাখুন।

আরো পড়ুন বিজ্ঞানের প্রতি শিশুর ঝোঁক বাড়াতে মেনে চলুন এই টিপসগুলি 

 

  • লোশন বা তেল

বাচ্চাকে স্নান করানোর সময় লোশন, তেল এগুলি মাখিয়ে স্নান করিয়েছেন। কিন্তু তারপর বাচ্চার কাছে কৌটোগুলো রেখে কয়েক মিনিটের জন্য অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন আর বাচ্চা কোন ভাবে কৌটো খুলতে পেরে কিছুটা লোশন খেয়ে ফেলেছে। আপনি হয়তো কখনও ভেবেই দেখেননি যে এখানেও বিপদ হতে পারে। কারণ বাচ্চাদের এই প্রোডাক্টগুলিতেও কম বেশি কেমিক্যাল থাকেই। আর কোন কোন বোতলের ক্যাপ খুলে ফেলা খুব সহজ। এমন হয়ে থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তা মুছে দিন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

 

  • আকারে খুব ছোট খেলনাগুলি সরিয়ে ফেলুন

খেলনা বাচ্চাদের কাছে মন কেড়ে নেওয়ার মত উপাদান। রঙ বেরঙের খেলনা শিশুদের মনোযোগ আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। শিশুর বিকাশের জন্যও খেলনা গুরুত্বপূর্ণ। তবে খেলনা বা খেলনার অংশ খুব ছোট হলে তা সমস্যার তৈরি করতে পারে। যেমন ধরুন মার্বেল বা খেলনা গাড়ির ছোট কোন পার্ট ইত্যাদি। খেলনা বাছার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। আপনার শিশুর বয়স অনুযায়ী নিরাপদ খেলনা নির্বাচন করুন। যে সব খেলনা আকারে বড়, কোন রুক্ষ অংশ নেই, ধারালো প্রান্ত নেই বা কোন দড়ি জাতীয় জিনিস খেলনায় যুক্ত নেই তেমন খেলনা শিশুকে দিন।

 আরো পড়ুন শিশুদের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, কল্পনা শক্তির বিকাশ ঘটবে 

  • সকেট, তার এগুলি নাগালের বাইরে রাখুন

ছেড়া বা উন্মুক্ত তার, সকেট, পাওয়ার আউটলেট এগুলি একেবারে শিশুর নাগালের বাইরে রাখার ব্যবস্থা করুন। এছাড়া যেকোনো রকম বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সরিয়ে রাখুন। অনেকেই সকেট থেকে শিশুদের দূরে রাখতে প্লাস্টিকের ফিতিং ব্যবহার করে থাকেন বটে। তবে অনে সময় শিশু এটিও খুলে ফেলতে সক্ষম হয়। ফলে দুর্ঘটনা একটা ঘটে যেতেই পারে। তাই যেকোনো প্রকার বৈদ্যুতিক জিনিস শিশুর থেকে লুকিয়ে রাখা বা তার নাগালের বাইরে রাখা একান্ত প্রয়োজন।

 

  • কীটনাশকের মত জিনিসগুলি খুব সাবধানে রাখুন

মশা, মাছি, আরশোলা, পোকামাকড় ইত্যাদি সবার বাড়িতেই কম বেশি উপদ্রব করে। আর এগুলির যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে আমরা সবাই কীটনাশক কিনে বাড়িতে রাখি। কিন্তু বাড়িতে যখন ছোট বাচ্চা রয়েছে, তখন বাড়তি সতর্কতা তো নিতেই হবে। বাচ্চারা বেশিরভাগ সময়েই মেঝেতে খেলাধুলা করে বলে পোকামাকড় থেকে রক্ষার জন্য এই কীটনাশকগুলি অনেকেই ব্যবহার করেন। প্রথমেই বলে রাখা ভালো সম্ভব হলে এসব বিষাক্ত কীটনাশকের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপায়ে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করুন। যেমন ধরুন টিকটিকি তাড়ানোর জন্য ডিমের খোলা বা ময়ুরের পালক অনেকেই ব্যবহার করেন। একান্তই যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে কীটনাশক ব্যবহার করুন, তবে বাচ্চাকে আগে শেখান থেকে সরিয়ে নিন। স্প্রে ফর্মে পাওয়া যায় এমন কীটনাশক ব্যবহারের আগে শিশুকে নিরাপদ স্থানে রাখুন।

 আরো পড়ুন গুড পেরেন্টিং এর 10 টি নীতি 

  • শিশুর কাছাকাছি ওষুধ রাখা চলবে না

সিরাপ, ট্যাবলেট, চোখে দেওয়ার ড্রপ, কাটা জায়গায় লাগানোর মলম, পেইন রিলিফ বামের মত ওষুধ আমাদের সকলের বাড়িতেই থাকে এবং বাচ্চারা সেগুলো আপনাকে ব্যবহার করতেও দেখে। এই জিনিসগুলি কখনোই এমন জায়গায় রাখবেন না যেখানে শিশুর হাত পৌঁছয়। শিশুরা সবসময় বড়দের অনুকরণ করতে পছন্দ করে। একটু চোখের আড়াল হলেই সে এগুলো নিয়ে আপনার মত করে ব্যবহার করতে চাইতে পারে। সতর্কতা মেনে শিশুকে কখনোই ওষুধপত্র আছে এমন জায়গায় একা ছেড়ে যাবেন না।

 

শিশু যে সময় থেকে হামাগুরি দেওয়া বা হাঁটা শিখছে তখন বাড়ি চাইল্ড প্রুফ করে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশু অবাধে চলাফেরা করতে যাতে সক্ষম হয় সেদিকে খেয়াল রেখে কিছু জিনিসপত্র সরিয়ে রাখা অভিভাবক হিসেবে আপনাকে যত্নশীল হতে হবে। আর্টিকেলে বলা জিনিসগুলির পাশাপাশি ছুড়ি, কাচির মত ধারালো জিনিস, সূচ, দড়ি ইত্যাদি সরিয়ে রাখুন। এছাড়া এমন কোন ফল যা আকারে ছোট এবং বীজ আছে, সেগুলিও শিশুর থেকে সরিয়ে রাখতে পারলেই ভালো

১।কয়েন সরিয়ে রাখুন
.২।লোশন বা তেল
.৩।আকারে খুব ছোট খেলনাগুলি সরিয়ে ফেলুন
.৪।সকেট, তার এগুলি নাগালের বাইরে রাখুন
.৫।কীটনাশকের মত জিনিসগুলি খুব সাবধানে রাখুন
.৬।শিশুর কাছাকাছি ওষুধ রাখা চলবে না
বাড়ির ছোট বাচ্চার কাছ থেকে সরিয়ে রাখতে হবে উপরিউক্ত জিনিসগুলো ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *