উদ্বিগ্ন

Parenting tips: কি করবেন সন্তান যদি ছোটখাটো ব্যাপারেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে?

কি করবেন সন্তান যদি ছোটখাটো ব্যাপারেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে ?

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা এই সময়ের অন্যতম চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে অন্যতম একটি। আর উদ্বেগ। শীর্ষে রয়েছেন এমন মনোবিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন যে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন শিশু কোন না কোন কারণে উদ্বেগের সম্মুখীন এবং এই উদ্বেগ ক্লিনিক্যাল স্তরের। এটি আরো বেশি প্রবল হয় বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছনোর সময়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে এই উদ্বেগগুলি স্থায়ী হয় না। তবে কোন কোন শিশুর ক্ষেত্রে থেকে যেতেও পারে যদি তারা সময় মত সঠিক সাহায্য না পায়। এখানে আমরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনায় আসছি যা উদ্বেগ দেখা দিলে বাচ্চাদের পিতামাতা বা শিক্ষকেরা কাজে লাগাতে পারবেন।

  • উদ্বেগের ব্যাপারটি এড়িয়ে গেলে চলবে না, সামাল দেওয়া শেখাতে হবে

কোন পিতামাতাই চান না তাদের সন্তানকে সমস্যার মধ্যে দেখতে। কিন্তু এই কারণে যদি বারংবার আপনি সন্তানের উদ্বেগের কারণগুলিকে তাদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করেন, তাহলে আদৌ তা কার্যকর উপায় প্রমানিত হবে না। কেননা প্রথমত আপনি প্রত্যেকবার তার উদ্বেগ বা আতঙ্কের কারণ দূরে সরিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সফল নাও হতে পারেন, আর দ্বিতীয়ত কীভাবে এসব সমস্যাকে সামাল দিতে হবে সেই ক্ষমতা শিশুর মধ্যে তৈরি হওয়াকে আপনি নিজের অজান্তেই বাধা দিয়ে ফেলছেন।

  • শিশুকে বোঝানোর আগে তাকে রিল্যাক্স করুন

শিশু খুব বেশি ভয় পেলে তখনই তাকে চুল চেরা বিশ্লেষণ করে বোঝাতে বসে গেলে আদৌ তা কোন কাজেই দেবে না। সবার আগে শিশুকে শান্ত করুন। কেননা তাকে শান্ত না করতে পারলে আপনি তার কাছাকাছি পৌঁছতে পারবেন না।

  • শিশুর ভয়কে কখনই উড়িয়ে দেবেন না

সন্তানের ভয়ের বিষয়টি আপনার কাছে যতই যুক্তিহীন মনে হোক না কেন, কখনই আপনি তার ভয়ের কারণকে তুচ্ছ ভেবে উড়িয়ে দেবেন না। পিতামাতার কর্তব্য তাদের সন্তানের অনুভুতির দিকগুলির খেয়াল রাখা। আপনি শিশুর ভয়ের কারণকে উড়িয়ে দিলে সে হয়তো আর আপনার সঙ্গে এই ব্যাপারে কথা বলতেই আগ্রহ বোধ করবে না। ফলে তার ভীতি দূর করা তো যাবেই না, উপরন্তু আপনার সঙ্গে সন্তানের দূরত্ব বেড়ে তা আরো বেশি সমস্যার সৃষ্টি করবে।

  • বাস্তবসম্মত দিকগুলি শিশুর সামনে তুলে ধরুন

বাস্তবতা সম্পর্কে শিশুকে ওয়াকিবহাল করতে চেষ্টা করুন। ধরুন আপনার সন্তানের আজকে কোথাও স্টেজ পারফর্মেন্স আছে। তার কবিতা বলতে ভুল হয়ে গেলে কেউ হেসে ফেলতে পারে এটা নিয়ে হয়তো সে আগে থেকেই আতঙ্কিত হয়ে আছে। এখানে আপনি তাকে ভরসা যোগান যে তার পারফর্মেন্স ভালো হবে এবং যদিও বা সে কোথাও ভুল করে তাহলে কি করে সেখানে তাকে ম্যানেজ করতে হবে।

  • যেচে পড়ে আতঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন করতে যাবেন না

তুমি কি বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন? এই ধরণের প্রশ্ন নিজে থেকে করতে যাবেন না। কেননা এটি নেগেটিভ রেজাল্ট দিতে পারে। সন্তান হয়তো আদৌ চিন্তিত ছিল না কিন্তু আপনার প্রশ্নের পর সে ভাবতে শুরু করেছে যে পরীক্ষা নিয়ে তার একটু হলেও চিন্তিত হওয়া দরকার। তাই এই ধরণের প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন। সন্তানকে তার অনুভূতি সম্পর্কে কথা বলতে উৎসাহিত করুন। “তুমি বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ে কি ভাবছো?” এই ধরণের প্রশ্ন করে তাকে নিজের অনুভুতি প্রকাশ করতে দিন।

  • সন্তানের সহ্যশক্তি বাড়াতে সাহায্য করুন

সন্তানের উদবেগে আপনি আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন না। সন্তান কে উদ্বেগ সহ্য করার শক্তি যোগান। তাকে বুঝতে দিন সে যদি নিজের উদ্বেগ সহ্য করতে এবং তা সামাল দিতে সক্ষম হয় তাহলে তা বাহবা দেওয়ার মোট ব্যাপার। ভয় কে কাটিয়ে উঠে তবেই আমরা জীবনে এগিয়ে যেতে পারি, একথা বাচ্চাদের বুঝতে দিন। সময়ের সাথে সাথে এই ভয় একাই অপসারিত হতে থাকে। হয়তো আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী খুব দ্রুত নাও হতে পারে। তবে এক সময় এই ভয় কেটে যাবেই।

  • উদ্বেগ মোকাবেলার উপায় বাতলে দিন

আপনার বাচ্চাদের উদ্বেগ সামলানোর একাধিক ভালো উপায় আছে। হাতের কাছেই সবচেয়ে সহজ উপায় টি হল আপনার নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলা। আপনি নিজে কীভাবে উদ্বেগের সময় পরিস্থতি সামলান বা কীভাবে মোকাবিলা করেন সেই অভিজ্ঞতার কথা শিশুর সঙ্গে শেয়ার করুন। তবে কখনই এমন ভান করবেন না যে আপনার কোন উদ্বেগই হয় না। জটিল পরিস্থিতিতে আপনি কতটা শান্তভাবে তা পরিচালনা করতে পারছেন, কীভাবে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠছেন তা সন্তানকে বুঝতে দিন।

বাচ্চাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে এমন উদ্বেগের কারণগুলিকে শৈশবেই নজর দেওয়া না হলে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরো বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে। শিশুর উদ্বেগ আর পাঁচটা শিশুর মত সাধারণ হতে পারে, আবার তা ব্যাধির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই অভিভাবক হিসেবে আপনাকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে এই উদ্বেগ শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্যকেই প্রভাবিত করতে পারে। উদ্বেগজনিত কারণ যদি ইতিমধ্যেই ব্যাধির রূপ নিয়ে থাকে তাহলে তা বাচ্চাদের মধ্যে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি করে। যেমন স্কুল যদি বাচ্চার উদ্বেগের কারণ হয়ে থাকে তাহলে হয়তো প্রতিদিনই সে কোন না কোন অজুহাতে স্কুল যাচ্ছে না। তাই সচেতন হয়ে খেয়াল করুন এবং প্রয়োজন দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

  • উদ্বিগ্ন * উদ্বিগ্ন * উদ্বিগ্ন * উদ্বিগ্ন * উদ্বিগ্ন * উদ্বিগ্ন

আরো পড়ুন

  আপনার সন্তান ব্রাশ করতে না চাইলে কিভাবে করাবেন ?

  বন্ধুদের সাথে লড়াই থামানোর সহজ কিছু টিপস

  আদর্শ অভিভাবক কিভাবে হয়ে উঠবেন ?

  ভারতীয় অভিভাবকরা যেসমস্ত ভুল করে থাকেন ?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *