১৯৮৬ সালের এডুকেশন পলিসির সুপারিশ অনুযায়ী নবোদয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গ্রামীণ এলাকার ছেলেমেয়েদের সম্ভাবনাকে বিকাশ করার লক্ষ্যে নবোদয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মূল্যবোধ স্থাপন, তাদের সর্বোত্তম শিক্ষা প্রদান করে ব্যক্তিত্বের বিকাশ করা, এই সমস্ত বিষয়ের উপর নবোদয় বিদ্যালয় জোর দিয়ে থাকে। যে কারণে প্রত্যেক বছর লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার নবোদয় বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন জমা পড়ে। ফলে প্রতিযোগিতা কিন্তু তুঙ্গে। তবে চিন্তা করবেন না। কিভাবে প্রস্তুতি নিলে নবোদয় বিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া যেতে পারে রইল তারই কিছু টিপস-
প্রস্তুতির জন্য কোন কোন টিপস ফলো করতে হবে ?(নবোদয় বিদ্যালয়)
যে সকল পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে, তাদের মধ্যে থেকে মাত্র ৩ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। তাই পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে একজন পড়ুয়াকে বিশেষ ভাবে মনযোগী হতে হবে। যে কোন লক্ষ্যে পৌছনোর ক্ষেত্রেই কঠোর পরিশ্রম এবং নিষ্ঠাই শেষ কথা। এর কোন বিকল্পই নেই। তবে শুধু হার্ড ওয়ার্ক নয়, স্মার্ট ওয়ার্ক ও কিন্তু প্রয়োজন রয়েছে। এই দুইয়ের সমন্বয় করতে পারলে একজন পড়ুয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা আরো অনেকখানি বেড়ে যায়। ঠিক কোন কোন টিপস একজন পড়ুয়াকে সাফল্যের দিকে আরো একধাপ এগিয়ে দিতে পারে ? দেখে নিনঃ
- আগে সিলেবাস খুঁটিয়ে পড়ে দেখতে হবেঃ
সরাসরি পড়াশোনা শুরু করার আগে পরীক্ষার সিলেবাস খুঁটিয়ে পড়ে ফেলতে হবে। পরীক্ষার সিলেবাসে কোন কোন বিষয় রয়েছে, কোন বিষয় থেকে কতগুলি করে প্রশ্ন আসে, কত নম্বরের প্রশ্ন আসে, সেই সমস্ত কিছু আগে খুব ভালো করে জেনে নিতে হবে। এবার সিলেবাস অনুযায়ী বিষয় ভাগ করে নিয়ে স্টাডি প্ল্যান বানিয়ে ফেলতে হবে। স্টাডি প্ল্যান বানানোর জন্য অনেক রকম টিপস অনেকেই দিয়ে থাকেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় নিজের মত করে পড়াশোনার জন্য স্টাডি প্ল্যান তৈরি করা। এটি নির্ভর করে সবার নিজস্বতার উপর। যেমন কেউ হয়তো একই সঙ্গে অঙ্ক, ভাষা, ইংরেজি, লজিকের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে, আবার কারোর মনে হচ্ছে ভাষা ও লজিক শেষ করে তারপর অন্য বিষয় শুরু করলে সুবিধা হবে। নিজের সুবিধা মত এভাবে স্টাডি প্ল্যান তৈরি করে পড়াশোনা করা বেশ কার্যকরী।
নবোদয় বিদ্যালয়ের ভর্তি সম্পর্কে জানুন
- ঘড়ি দেখে কাজ শেষ করা অভ্যেস করতে হবেঃ
প্রস্তুতির সময় হোক কিংবা পরীক্ষা, যে কোন ক্ষেত্রেই সময়ের খেয়াল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিকে। সময়ের সঙ্গে কাজ শেষ করতে না পারলে তা আখেরে মূল্যহীন হয়ে পড়বে। তাই টাইম ম্যানেজমেন্ট করতেই হবে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য দিনে অন্তত একঘণ্টা সময় বরাদ্দ করা উচিৎ। তবে যতখানি সম্ভব বেশি সময় পড়াশোনার জন্য বরাদ্দ করতে পারলে ভালো। ধরুন কেউ প্রতিদিন সব বিষয়ই পড়ছে, সেক্ষেত্রে সে প্রতিটি বিষয়ের জন্য এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় দিতে পারে। আবার যদি কেউ দুটি বিষয় আগে শেষ করে ফেলতে চাইছে, সেক্ষেত্রে সে প্রত্যেক বিষয়ের জন্য দুই থেকে তিন ঘণ্টা করে সময় দিতে পারলে ভালো।
- শর্ট নোট তৈরি করার উপর জোর দিতে হবেঃ
অন্যের তৈরি করা নোট নয়, পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য নিজের হাতে নোট তৈরি করা একটি ভীষন গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অনেকেই ভাবেন বই থাকতে নিজে নোট করতে যাবেন কেন? বইয়ে যা পরলেন তার একটি জিষ্ট তৈরি করে খাতায় রাখতে হবে। মনোবিজ্ঞান বলে, ছাপা অক্ষরের তুলনায় নিজের হাতের লেখা বেশি মনে থাকে । নোট তৈরি করার সময় বিভিন্ন রঙের পেন অথবা হাইলাইটার ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষ পয়েন্ট আন্ডারলাইন বা হাইলাইট করে রাখলে রিভিশনের সময় আগে চোখে পড়বে।তবে মনে রাখতে হবে, নোট হবে একদম ছোট, কী ওয়ার্ডের উপর জোর দিতে হবে। যে কোন বিষয় আরো ভালো করে মনে রাখতে টেবিল বা ফ্লোচার্ট এঁকে নোট তৈরি করা যেতে পারে।
- নির্দিষ্ট সময় অন্তর রিভিশন করতে হবেঃ
আজকে যা পড়েছেন বা যা কিছু শিখতে পেরেছেন, তা যদি পুনরায় অনুশীলন বা রিভিশন না করেন তাহলে শেখা জিনিস ভুলে যাবেন এবং পরীক্ষায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা এখানেই অনেকটা কমে যাবে। মনোবিজ্ঞান বলে, আমরা যদি কোন বিষয় স্থায়ী মেমরিতে রাখতে চাই অথবা বহুদিন পর্যন্ত মনে রাখতে চাই তাহলে সঠিকভাবে রিভিশনের প্রয়োজন রয়েছে। পরীক্ষায় সঠিকভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে রিভিশন করতে হবে। ধরুন সপ্তাহের একটি দিন শুধু রিভিশনের জন্য রাখলেন। বাকি ৬ দিন যা কিছু পড়েছেন সেগুলি একবার ঝালিয়ে নিলেন। বা যদি মনে হয় ৬ দিনের রিভিশন অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে ৩ দিন অন্তর অন্তর রিভিশন করা যেতে পারে।
- বিগত বছরগুলির প্রশ্ন সমাধান করতে হবেঃ
শুধু সিলেবাস শেষ করাই যথেষ্ট নয়। বিগত বছরগুলির প্রশ্নপত্র খুঁটিয়ে দেখতে হবে। প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করতে প্রশ্নের ট্রেণ্ড বোঝা যাবে। অর্থাৎ কি ধরণের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসছে, কোন বিষয়ের কোন টপিক থেকে বেশি প্রশ্ন হচ্ছে, কি ধরণের প্রশ্ন আসছে সেগুলি বোঝা যাবে। সিলেবাসের পাশাপাশি আগের বছরগুলির প্রশ্নপত্র সমাধান করতে হবে, কোথায় ভুল হচ্ছে তা দেখে শুধরে নিতে হবে।
- কতটুকু শেখা হল তা বিবেচনা করে দেখতে হবেঃ
একটি বিষয় বা টপিক পড়া শেষ করেই অন্য একটি বিষয়ে চলে যাওয়া কখনই ভালো প্রস্তুতির লক্ষণ নয়। একটি টপিক পড়া শেষ হয়ে গেলে তা আগে ভালো করে বিচার বিবেচনা করে দেখতে হবে। কোন জায়গাগুলো খুব ভালো বুঝতে পেরেছেন বা কোনগুলো আরেকটু পরিষ্কার হওয়ার প্রয়োজন আছে, তা দেখতে হবে। তবে গিয়ে পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি হবে।
জীবনের যেকন পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজন নিজের প্রতি গভীর বিশ্বাস । সেই বিশ্বাস কর্মের দিকে অগ্রসর হওয়ার শক্তি প্রদান করে । যারা গভীর বিশ্বাসের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করবে প্রত্যকেই সফল হবে ।
আরো পড়ুন-
মোবাইল আসক্তি থেকে সন্তানকে কিভাবে রক্ষা করবেন ?
শিশুর রাগ কমানোর সহজ কিছু উপায় জানুন ?
শিশুদের কিভাবে যৌন শিক্ষা দিবেন ?