সন্তানের মধ্যে এই লক্ষনগুলি দেখা দিলে এক্ষুনি সচেতন হন

সন্তানের মধ্যে এই লক্ষনগুলি দেখা দিলে এক্ষুনি সচেতন হন

সন্তানের মধ্যে এই লক্ষনগুলি দেখা দিলে এক্ষুনি সচেতন হন

 

সদ্য হওয়া বাবা মায়েরা শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ খানিকটা চিন্তিত থাকেন। কখনও হয়তো তারা অল্পেতেই ঘাবড়ে যাচ্ছেন, আবার কখনও বা বাড়ির বড়োদের কথা মত ঘরোয়া টোটকা কাজে লাগাতে গিয়ে সময় নষ্ট করে ফেলছেন। আসলে তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না ঠিক কতটা বাড়াবাড়ি হওয়ার আগে শিশুর ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন। জ্বর, পেট ব্যথার মত সাধারণ অসুখ তো বাচ্চাদের লেগেই থাকে। কিন্তু কখন তা সাধারণ আর কখন উদ্বেগের তা বুঝে উঠতে সময় লেগে যায়। আর এগুলি অনেক সময়েই সদ্য হওয়া পিতামাতাদের নানা ভাবে বিভ্রান্ত করে। তাই কোন কোন লক্ষন গুলি দেখা দিলে একেবারেই উপেক্ষা করা যাবে না তেমন কিছু গাইডলাইন এই আর্টিকেলে বলা হল-

 

  • দেহের উচ্চ তাপমাত্রা

হঠাৎ করেই জ্বর এসে বাচ্চার দেহের তাপমাত্রা খুব বেড়ে গেলে অবশ্যই চিন্তার কারণ আছে। ৩ মাসের কম বয়সী শিশুর দেহের তাপমাত্রা 100.4 ডিগ্রী ফারেনহাইটের বেশি হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। ৩-৬ মাস বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে  101 ডিগ্রী এবং ২ বছরের কম বয়সী শিশুর জন্য 103 হলে একই পন্থা আপনাকে নিতে হবে। কেননা হঠাৎ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি কোন ইনফেকশনের লক্ষন হতে পারে। যেমন ধরুন মূত্রনালীর সংক্রমণ। তাই ঘরোয়া টোটকা এক্ষেত্রে বাদ দিন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

 

  • জ্বর ৫ দিনের বেশি স্থায়ী হলে

ঠাণ্ডা লাগার কারণে সাধারণ যে জ্বর হয় তা কিন্ত ৫ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয় না। তার আগেই কমে যায়। যদি দেখেন শিশুর জ্বর ৫ দিন বা তার বেশি স্থায়ী হচ্ছে তাহলে একটি লক্ষন যে সংক্রমণটি শিশুর দেহের লড়াই করার ক্ষমতার তুলনায় শক্তিশালী। এক্ষেত্রে তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কম হলেও ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন রয়েছে। যদি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত জ্বর হয়ে থাকে তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার দরকার হতে পারে।

আরো পড়ুন –Kids Memory : কি খেলে বাচ্চাদের মস্তিষ্ক (ব্রেইন) ভালো হয়

 

  • মেনিনজাইটিসের লক্ষন নয়তো?

কি করে বুঝবেন বাচ্চার মেনিনজাইটিস হয়েছে কিনা? যদি দেখেন শিশুর জ্বর আছে, সঙ্গে মাথা ব্যথা ও ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়ার মত উপসর্গ, তাহলে চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। পাশাপাশি ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে যা ক্ষত বা ছোট লাল বিন্দুর মত দেখায়।

 

  • ছোট লাল বিন্দু বিন্দু ফুসকুড়ি হলে

রিং আকৃতির ফুসকুড়ি হয়েছে এবং তার কেন্দ্রে ফ্যাকাসে দাগ আছে, এই ধরণের উপসর্গ কিন্তু লাইম রোগকে নির্দেশ করতে পারে। তবে সবসময় যে তা শুধু লাইম রোগ  হতে হবে তেমন ভেবে ভয় পাবেন না। কোন অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এমনটা হলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সংকোচ করবেন না।

 

  • তিল বা তিল জাতীয় কিছুর পরিবর্তন দেখা দিলে

জন্মের সময় বাচ্চার তিল বা আঁচিল থাকলে সেগুলির উপর কম বেশি নজর রাখুন। কোন অনিয়মিত আকারের তিল বা ছিদ্রযুক্ত তিল যদি খেয়াল করেন, তাহলে একবার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নিন। কেননা এগুলো অনেক সময়েই ত্বকের ক্যান্সারের লক্ষন হতে পারে। বাচ্চাকে স্নান করানোর সময় কিছুদিন অন্তর পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এমন কোন অস্বাভাবিক তিল হচ্ছে কিনা।

আরো পড়ুন –পেরেন্টিং স্টাইলের 4 টি ধরণ এবং আপনার শিশুর উপর এগুলির প্রভাব

 

  • দিনের পর দিন পেটের ডান দিকে ব্যথা

আপনার সন্তান যদি দিনের পর দিন পেটের ডানদিকে নীচের অংশে ব্যথার কথা বলে তাহলে আপনাকে সচেতন হতে হবে। কেননা এই অ্যাপেনডিসাইটিসের লক্ষন হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। এরকম উপসর্গ হলে অবিলম্বে ডাক্তারকে কল করুন। কারণ অ্যাপেনডিসাইটিস দ্রুত বাড়তে থাকে। ফলে প্রথম দিকে ধরা পড়লে তা অনেক বেশি কার্যকর ভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়।

 

  • মাথাব্যথা, সঙ্গে বমি

রোদের মধ্যে ঘুরে এলে বা অন্য অনেক কারণে বাচ্চাদের মাথাব্যথা হয় ঠিকই। কিন্তু মাথায় তীব্র যন্ত্রণা সঙ্গে বমি হলে তা মাইগ্রেন হতে পারে। যদিও বাচ্চাদের মাইগ্রেন তেমন বিপজ্জনক হয় না, তবে মাইগ্রেনের তীব্র যন্ত্রণা অনেক সময় শিশুকে ভোরবেলা বা রাতে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। তাই চিকিৎসকের কাছে যান, তিনি আপনার শিশুর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা নির্ধারণ করে দেবেন।

 

  • মুখ বা ঠোটে শুষ্কতা, প্রস্রাব কমে যাওয়া

শিশুর ত্বকে শুষ্ক ভাব, মুখ বা ঠোট শুষ্ক, প্রস্রাব কমে যাওয়া এই লক্ষনগুলি ডিহাইড্রেশনের সঙ্গে যুক্ত। সত্যিই যদি ডিহাইড্রেশনের কারণে এগুলি হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি তার দেহে তরলের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে তাকে আরো বেশি করে পানীয় দিন।

আরো পড়ুন – এই গরমে দেহে জলের ঘাটতি মেটাতে খাবারে কি দেবেন শিশুকে

 

  • শ্বাস নেওয়ার সময় হাঁপাচ্ছে বা শিসের মত আওয়াজ হলে

বাচ্চার শ্বাস- প্রশ্বাসের সময় শিসের মত আওয়াজ কানে আসছে অথবা সে একটুতেই হাঁপিয়ে যাচ্ছে এমন লক্ষন দেখলে তা উদ্বেগের হতে পারে। শ্বাসকষ্ট হলে তা নিউমনিয়া, হুপিং কাশি, অ্যাস্থমার মত বিভিন্ন কারণে হতে। এই সমস্যাগুলি দেখা দিলে এক্ষুনি আপনার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন।

 

  • পড়ে যাওয়ার পর বমি হলে

শিশু চেতনা হারিয়ে পড়ে যাচ্ছে এবং তারপর তার বমি হচ্ছে, এমন হলে ডাক্তারের কাছে আপনাকে সত্বর  ছুটতে হবে। এছাড়া যদি দেখেন হঠাৎ করেই চেতনা হারানোর মত স্নায়ুবিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তাহলে জরুরী পরিসেবার প্রয়োজন আছে। এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই নিকটবর্তী স্বাস্থ্য পরিসেবার সাহায্য নিন একজন সুচিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই সমস্যার মোকাবেলা করুন।

 

আজকের অ্যাটিক্যালটি আপনাদের তথ্যপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করে, আপনার আপনজনদের পড়ার সুযোগ করে দিন ।পরবর্তীতে আপনারা কেমন ধরনের অ্যাটিক্যাল পড়তে চান তা কমেন্ট করে জানান।

 

শেয়ার বাজার সম্পর্কে জানতে আপনারা ভিজিট করতে পারেন – www.sharebazrblog.com 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *